অনির্দিষ্টকালের জন্য বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ 

আগামীকাল সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠন।

বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছে পেট্রাপোল সীমান্তে পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরাসহ বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো।

জানা গেছে, পেট্রাপোল সেন্ট্রাল পার্কিং (ল্যান্ড পোর্ট) এর নতুন ম্যানেজার কমলেশ সাহানীর খামখেয়ালি সিদ্ধান্তের কারণে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত কর্মীসহ বন্দর ব্যবহারকারীদের। নতুন ম্যানেজার কারো মতামত না নিয়ে নতুন নতুন আইন তৈরি করছেন। বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) কে কাজে লাগিয়ে পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের আইসিপিতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরাসহ বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠন গুলো আমদানি-রপ্তানি কাজে নানা হয়রানি বন্ধসহ নতুন ল্যান্ড পোট ম্যানেজার কমলেশ সাহানীর প্রত্যাহারের দাবিতে গত এক সপ্তাহ দফায় দফায় বৈঠক ও বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন। শনিবার (২৯ জানুয়ারি) তারা মাইকিং করে সকলকে কাজ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। রোববারের মধ্যে তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে সোমবার সকাল থেকে পেট্রাপোল বন্দরে অনিদিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বন্দর ব্যবহারকারীরা।

তাদের দাবি, নতুন কার্ড তৈরি না হওয়া পর্যন্ত পুরোনো নিয়মে তাদের আইসিপিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হোক। যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দাবি মানা হবে না ততক্ষন পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

পেট্রাপোল এক্সপোর্ট এন্ড ইমপোর্ট এসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ দে বলেন, বিএসএফ পেট্রাপোল পরিবহণ কর্মীদের আইসিপিতে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে। আমদানি-রপ্তানি কাজে বন্দর অভ্যন্তরে প্রবেশসহ নানা হয়রানি বন্ধ না হলে আগামী ৩১ জানুয়ারি সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দুই-দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, আমদানি-রপ্তানি বন্ধ বা পেট্রাপোল বন্দরে ধর্মঘটের কোন পত্র আমরা পাইনি। শুনেছি ওপারে এলপি ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী ও ট্রান্সপোর্ট এসোসিয়েশন আন্দোলন করছেন। তবে আন্দালন না করার জন্য ওপারে ব্যবসায়ীদের সাথে প্রশাসনের বৈঠক চলছে। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও আমাদের বন্দরে লোড আনলোড প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকবে।

ভারতের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে আইসিপি-পেট্রাপোলে একাধিক চোরাচালানের ঘটনা ঘটেছে সেই সব নজরে আসতেই, বিএসএফ তাদের নজরদারি এবং সতর্কতা ব্যবস্থায় আরো কড়াকড়ি করার জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। সম্প্রতি দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে পরিবহন কর্মীদের সেখানে যাওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

বিএসএফ জানিয়েছে, চালকরা জাল ড্রাইভিং লাইসেন্সের ভিত্তিতে শুল্ক বিভাগ থেকে গাড়ির পাস নেয়, যার ভিত্তিতে বিএসএফ ট্রাকগুলিকে বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের সুষ্ঠু পরিচালনা নিশ্চিত করার জন্য, বিএসএফ স্থায়ী অপারেটিং পদ্ধতি অনুসরণ করতে বলেছে।

পূর্বপশ্চিম/এএন